Thursday 19 February 2015

বোকামির ফল

একবার একটা জলাসয়ে একটা কাচ্ছপ বাস করতো। তার নাম ছিল হান্দু। সে যে জলাশয়ে বাস করতো সেখানে সারা বছর জল থাকতো, তার জলও ছিল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। সেখানে অনেক মাছ ছিল, শেওলা, গগুলি সব ছিল। এগুলোকে খাবার জন্য বিভিন্ন পাখি বাইরে থেকে আসতো। সেখানে যে সব পাখি, হাঁস এসেছিল তাদের মধ্যে দুটি হাঁসের সাথে হাঁদুর খুব বন্ধুত্ব হয়েছিল, তাদের নাম ছিল রামু আর শ্যামু। তারা সেখানে বেশ ভালোই ছিল, একবার সেখানে বিরাট খরা দেখাদিল, বর্ষার সময় একফোটাও বৃষ্টি হলো না।
চারিদিকের জলাশয়, পুকুর ঘাট শুকিয়ে গেল, সেই জলাশয়টিও প্রায় শুকিয়ে গেছে। রামু ও শ্যামু ঠিক করলো তারা সেই জলাশয় ছেড়ে চলে যাবে। হান্দু কাতর হয়ে বলল আমার কি হবে ভাই, আমি কি জলের অভাবে শুকিয়ে মরবো। রামুশ্যামু সমস্যায় পড়ল, তাদের সেই জলাশয় ছেড়ে যেতেই হবে কিন্তু বন্ধুকে এভাবে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে যেতেও তাদের খুব কষ্ট হচ্ছিল। শেষে অনেক আলাপ আলোচনার পরে তারা একটা উপায় বার করল, একটা লাঠির মাঝখানে কচ্ছপটা কামড়ে ধরবে, আর হাসেরা দুই প্রান্তে ধরে সেটা উড়িয়ে নিয়ে কোন বড় জলাশয়ে নিয়ে যাবে যেখানে জল শুকিয়ে যায়নি, অনেক জল আছে। সেরকমই ঠিক হল কিন্তু হাসেরা কচ্ছপকে সাবধান করে দিল উড়ে যাবার সময় একটা কথাও বলবে না, তা নাহলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। হান্দু বলল তোমরা কিছু চিন্তা করো না আমি একটা কথাও বলবো না।
এভাবে তারা উড়ে চলল, এভাবে উওড়তে দেখে একদল লোক হৈ হৈ করে তাদের পিছু নিল। তারা বিভিন্ন রকমের মন্তব্য করছিল, এই কাচ্ছপটা পেলে পুড়িয়ে খাবো, কেও বলছে মাংস করে খাবে, এই রকমের আর কি। তো রামুশ্যামুর সাথে যে হাঁসেরা উড়ে চলে ছিলো তারাও বলতে লাগলো সাবধানে চলো নাহলে বিপদ হবে, দেখছো না ওরা কি বলছে পুড়িয়ে খাবে, মাংসকরে খাবে। রামু শ্যামু চুপচাপ উড়ে চলল কিন্তু হান্দু রেগে গিয়ে বলল ওরা ছাই খাবে। যেই বলেছে ‘ওরা’ ওমনি মুখে ধরা লাঠি ছেড়ে ফেলেছে আর নিচে পড়ে গেলো, পুরা কথাটাও বলতে পারলো না। রামুশ্যামু দেখলো নিচের মানুষেরা হান্দুকে ধরে ফেলেছে আরা আনন্দে হৈ চৈ করছে।
তারা একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ফেলে বলল “ বোকাদের মরন এভাবেই হয়।” তার পরে তারা দুঃখী মনে উড়ে চলে গেল।

নীতিকথাঃ বোকারা নিজেদের বোকামির জন্যই বিপদে পড়ে।