Saturday 27 December 2014

বৃষ্টিতে মন ভিজে যাক Bristite mon vije jak

১.
প্রায় বেশ কিছুদিন ধরেই শুন্যর ঠোঁটের কোণে চিরচেনা সেই পরিচিত হাসি দেখা যায় না। হাসি ব্যাপারটা কেমন জানি অপরিচিত এখন তার কাছে। ছোট থেকে ছোট জিনিসের মাঝে সুখ খুঁজে নেওয়া শুন্য এখন যেন অন্য জগতের বাসিন্দা। অসম্ভব রকমের স্বপ্নবিলাসী এই তরুনের রঙিন চোখ দুটো প্রতিনিয়ত নতুন নতুন স্বপ্ন বোনায় ব্যস্ত থাকত। হটাৎ চারপাশ থেকে হতাশার মেঘ এসে তার স্বপ্নিল আকাশটাকে ঢেকে দিয়েছে,সেটা তার চোখজোড়া দেখলেই বোঝা যায়। শুন্যর এমন নিরাশ অভিব্যাক্তি তার চারপাশের পরিচিত মানুষদের কাছে খুব অচেনা।

কিছু কিছু মানুষ নিজেদের আবেগকে মনের মাঝে লুকিয়ে রাখার অসীম ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়। শুন্য ও তাদের মধ্যে একজন। তার স্কুলের প্রিয় বাংলা শিক্ষক তাকে একবার বলেছিলেন “তোমার দুঃখগুলোকে তোমার মত করে কেউ বুঝবে না কিংবা বুঝতে চাইবে না। তাই ভাগাভাগি করার ফলে তোমার কষ্টটা হয়ত আরও বেড়ে যাবে,এজন্য চেষ্টা করবে নিজের দুঃখগুলোকে নিজেই সামলে নেওয়ার”। শুন্য নিজের দুঃখগুলো তাই কখনও কারও সাথে ভাগাভাগি করে না। জীবন নিয়ে এর আগে কখনও এত চিন্তা করত না শুন্য। বন্ধু, পরিবার আর প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে বেশ ভালো ছিল সে। কিন্তু এখন  মাঝে মাঝেই তার মনে হয়, না পাওয়ার তালিকাটা দিন দিন বেড়েই চলেছে। কষ্টগুলো জয় করে বেঁচে থাকার সাহস কিংবা সামর্থ্য কোনটাই এখন তার নেই। তাই যে চোখজোড়া একসময় স্বপ্ন বুনতে ব্যাস্ত থাকত সেই চোখজোড়া এখন শুধু মুক্তি খুঁজে বেড়ায়। পৃথিবীর সমস্ত কিছু থেকে মুক্তি।

২.

ইদানিং সব কাজেই কিছু না কিছু একটা অনর্থ ঘটবেই। মেজাজটা তাই সবসময় খিটখিটে হয়ে থাকে শুন্যর। কাজেও ঠিক মত মন বসাতে পারছে না আজকাল। একটা জিনিস সে কিছুতেই বুঝে উঠতে পারছে না যে এত কষ্ট করে এত সুন্দর প্রেজেন্টেশান দেওয়ার পরও বস কি ভেবে প্রোজেক্ট এর দায়িত্ব তাকে না দিয়ে মিস শায়লা কে দিলেন! দায়িত্ব সহকারে কাজ করেও বসকে খুশি করা যাচ্ছে না উল্টো বসের ঝাড়ি খাওয়া এখন রোজকার নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলিগদের সাথেও সম্পর্কটা ভালো যাচ্ছে না তার। এককথায় অফিসটা অসহ্য হয়ে উঠেছে শুন্যর কাছে। চাকরিটা যে থাকবে না সেটা স্পষ্ট বুঝতে পারছে সে। তার বাবা রিটায়ার্ড করেছেন মাত্র দুমাস হল। সংসারের পুরো ভার এখন শুন্য’র কাঁধে। তাই পরিবারের কথা চিন্তা করে আরেকটা চাকরি না পাওয়া পর্যন্ত নিজ থেকে এই চাকরিটা ছেড়ে দিতে পারছে না সে। নিজের অজান্তেই কয়েকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে শুন্য।

কাজের চাপে এখন আর বিকেলের আড্ডাতে যেতে পারে না শুন্য। ফলে বন্ধুদের সাথে দূরত্বটা না চাইতেও কিছুটা বেড়ে গেছে। বন্ধু আর আড্ডার কথা চিন্তা করতে করতে মনটা আরও খারাপ হয়ে গেল শুন্যর। মনটাকে হালকা করার জন্য অহনাকে ফোন দেয় সে। অহনার সাথে শুন্যর পরিচয় ভার্সিটির শুরুতে কিন্তু সম্পর্ক হয়েছে মাত্র এক বছর হল। আজকাল অহনাকে নিয়েও সমস্যার অন্ত নেই। ইদানিং নাকি তার বাসা থেকে বিয়ের জন্য খুব চাপ দেওয়া হচ্ছে। এই কথাটা অহনা প্রতিদিন শুন্যকে বলে আর তাড়া দেয় যাতে শুন্য তার বাবা-মা কে দিয়ে অহনার বাসায় প্রপোজাল পাঠায়। শুন্য চুপচাপ শুনে আর অহনাকে এটা বুঝাতে ব্যাস্ত থাকে যে, তার চাকরির মেয়াদ এখনও ছয় মাসও হয়নি আর তার পরিবারের এখন যে অবস্থা তাতে করে সংসার চালিয়ে, একটি মেয়ের সম্পূর্ণ দায়ভার নেওয়ার মত ক্ষমতা তার এখনও হয়নি। এজন্য তার আরও কয়েক মাস সময় দরকার। এই নিয়ে শুন্যর সাথে অহনার এখন প্রতিনিয়ত ঝগড়া হয়। এদিকে দুই তিনবার ফোন দেওয়ার পরও অহনা কল রিসিভ করে না। একটু পরেই ফোনে অহনা’র মেসেজ আসে। মেসেজে লেখা “আজকে বিকাল ৫টায় পার্কে চলে এস,দেখা করব”। মেসেজ পেয়ে শুন্য মনে মনে কিছুটা খুশি হয়। মনে মনে ভাবে, অনেকদিন হয়ে গেছে অহনার সাথে দেখা হয়না,ওর সাথে দেখা হলে হয়ত মনটা ভালো হয়ে যাবে,এই মেয়েটা আছে বলেই হয়ত এত কষ্টের মাঝেও বেঁচে থাকতে ইচ্ছে হয়। বিকাল হতেই অফিস থেকে বের হয়ে সোজা পার্কে চলে যায় শুন্য। এই জায়গাটা তাদের দুজনেরই ভীষণ প্রিয়। এখানেই শুন্য অহনাকে নিজের মনের অনুভূতিগুলো জানিয়েছিল। পুরনো স্মৃতি ভাবতে ভাবতে নস্টালজিক হয়ে পরে শুন্য। একটু পরেই অহনা চলে আসে। এসে বেঞ্চে শুন্যর পাশে বসে অহনা।

তারপর শুন্য কিছু বলার আগেই অহনা বলে উঠে, “তোমাকে এর আগেও আমি অনেকবার বলেছি, বাসা থেকে বিয়ের জন্য আমাকে বাবা-মা অনেক চাপ দিচ্ছেন। এতদিন আমি উনাদেরকে অনেক বাহানা দেখিয়েছি যাতে করে তুমি সময় পাও কিছু করার। কিন্তু আমার মনে হয় তুমি বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব সহকারে নাও নাই। আমি অনেক চিন্তা করে দেখেছি, এভাবে তোমার অপেক্ষা করে বসে থাকা আর সম্ভব না। তাই গত পরশু যে প্রপোজালটা এসেছিল তাতে আমি রাজি হয়ে গেছি। আগামীকাল আমার এঙ্গেইজমেনট। কালকের পর হয়ত তোমার সাথে আর দেখাও হবে না কথাও হবে না। এই কথাগুলো বলতেই আজকে এসেছি। আমি যাচ্ছি,তুমি ভালো থেকো”।

শুন্যকে কথা বলার কোন সুযোগ দেয় না অহনা। এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে বিদায় নেয়। শুন্য ঠিক কি করবে বুঝে উঠতে পারে না। চাকরির টানাপড়েন, বন্ধুদের সাথে দূরত্ব বৃদ্ধি, পরিবারের অর্থ অনটন আর সবশেষে ভালবাসার মানুষের চলে যাওয়া। অল্পকিছুদিনে জীবনের এহেন পরিবর্তন একটা মানুষকে অনুভূতিহীন করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। শুন্যর নিজেকে জীবন যুদ্ধে পরাজিত এক সৈনিক মনে হয়। একমুহূর্তের জন্য তার মনে হয় জীবনটাকে শেষ করে দিতে পারলে ভালো হত।

৩.

প্রচণ্ড বাতাস বইতে শুরু করেছে, হয়ত একটু পরেই আকাশ ভেঙ্গে বৃষ্টি নেমে আসবে। পুরা পার্কটা নিমিষেই খালি হয়ে গেল। সবাই তড়িঘড়ি করে ঘরে ফিরে যাচ্ছে। শুন্য তখনও একা বেঞ্চে বসে আছে আর মনে মনে হিসেব করে যাচ্ছে জীবনের সকল পাওয়া না পাওয়ার। শত চেষ্টা করেও হিসেব মিলাতে পারছে না শুন্য। যতবার না পাওয়ার পাল্লাটা ভারী হয়ে যাচ্ছে ততবার শুন্য’র মনে হচ্ছে নিজেকে শেষ করে দেওয়াই মুক্তির একমাত্র উপায়। শুন্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলে, আজকেই কিছু একটা করতে হবে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার জন্য। এভাবে আর বেঁচে থাকা সম্ভব না। এত কষ্ট করে, এত এত না পাওয়ার মাঝে বেঁচে থাকা যায় না,এর চেয়ে মৃত্যু অনেক সহজ। লড়াই করার মত মানসিকতা আর তার মাঝে অবশিষ্ট নেই তাই এখন মৃত্যুই মুক্তির একমাত্র পথ। হটাৎ করে তার চিন্তার ব্যাঘাত ঘটায় ১৪-১৫ বছরের একটি ছেলে।

--আপনি এখানে বসে আছেন কেন ভাইয়া?

--আমার ইচ্ছা,একরাশ বিরক্ত নিয়ে বলল শুন্য।

--না মানে সবাই তো বৃষ্টির ভয়ে বাসায় ছুটছে, তাই বললাম।

--তুমিও তো বসে আছ। তুমি কেন যাচ্ছ না?

--আমি তো বৃষ্টি আসার জন্যই বসে আছি। বৃষ্টিতে ভিজে তারপর বাসায় যাব।

--কেন? বৃষ্টিতে ভিজলে তোমার মা বকা দিবেন না?

--না বকা দিবেন না, বরং মা নিজ হাতে খুব যত্ন করে আমার মাথা মুছিয়ে দিবেন। আর একটু বকা হয়ত দিতেও পারেন, তবে এতে আমার ই লাভ।

--কিসের লাভ?

--মা যেদিন একটু বেশি বকাঝকা করেন ওইদিন দুবেলাই আমাকে নিজ হাতে যত্ন করে খাইয়ে দেন। মায়ের হাতে খাওয়ার মজাই আলাদা। এমনিতেও মা আমাকে আদর করেন,তবে বেশি বেশি আদর খেতে কার না ইচ্ছা করে বলেন? আপনারও তো ইচ্ছা করে তাই না?

--জানি না। কিন্তু বৃষ্টিতে ভিজার পর যদি তোমার জ্বর আসে তখন?

--জ্বর কোন ব্যাপার হল নাকি?

--কেন? কোন ব্যাপার না কেন?

--যার প্রতি মাসে একবার করে রক্ত বদল করতে হয় আর যার কাছে জীবনের মেয়াদ কয়েক মাসের গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ তার কাছে সামান্য জ্বর কোন বড় বিষয় না।



হটাৎ করে ধাক্কা খায় শুন্য। ছেলেটি কত সাবলীল ভাবে বলে যাচ্ছে! তার কথায় কোন কষ্ট নেই, নেই জীবনের প্রতি কোন আক্ষেপ। শুন্য বুঝেও না বুঝার ভান করে বলে উঠে,

--তোমার হাতে এত কদম ফুল কার জন্য?

--আমার দিদি’র জন্য। ও কদম ফুল খুব পছন্দ করে।

--এত ফুল কোথায় পেয়েছ?

--আমি পেরেছি,ঐ গাছটা থেকে।অনেক কষ্ট হয়েছে।

--অনেক কষ্ট হলে এতগুলো ফুল পারার কি দরকার ছিল? একটা দুইটা পারলেই হত।

--তা হত। কিন্তু এতগুলো কদম ফুল একসাথে দেখলে দিদি অনেক বেশি খুশি হবে। জানেন তো ও প্রতিদিন আমাকে আমার প্রিয় খাবারগুলো বানিয়ে খাওয়ায়। আর সবসময় আমার দোষগুলো নিজের কাঁধে নিয়ে মায়ের বকুনি খায় প্রতিদিন। আমি ওর সাথে কত ঝগড়া করি, মারামারি করি কিন্তু তাও আমার উপর একটুও রাগ করে না। অবশ্য প্রতিদিন একবার ঝগড়া না করলে আমাদের ভাত হযম হয় না। আমার ভালো বোনটার খুশির জন্য একটু কষ্ট আমি করতেই পারি, তাই না?

--হুম।

একদৃষ্টিতে ছেলেটির দিকে তাকিয়ে থাকে শুন্য। তার বিস্ময় যেন কাটে না। জীবনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়েও ছেলেটি কত নির্ভার,নিত্যদিনের ছোট ছোট ব্যাপারগুলোতে সুখ খুঁজে নেওয়ার কি দারুন প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে সে! মেঘলা আকাশ ভেঙ্গে অবধারিতভাবে বৃষ্টি নেমে আসে। দুজনেই ভিজতে থাকে চুপ করে। অঝোর বৃষ্টি, সামনে কদম ফুলের গাছটা দুলছে আর ভিজছে। বৃষ্টির ছাঁটে কদম ফুলগুলোকে দেখতে অদ্ভুত সুন্দর লাগছে। গাছটির সামনের বেঞ্চে বসে ভিজছে দুই প্রজন্মের দুইজন।

একজনের জীবনের কিছুটা সময় বাকি তবুও চোখে ঘরে ফিরে গিয়ে মায়ের ভালবাসা আর বোনের আদরের স্বপ্ন আর অন্যজনের জীবনের অনেকটা পথ বাকি অথচ চোখে শুধু হতাশার প্রতিচ্ছবি। দুজনের চোখে জীবন দুরকম। শুন্য চুপচাপ ছোট ছেলেটির চোখের দিকে তাকায় আর ভাবতে থাকে হয়ত এরই নাম জীবন যেটা সে এই মুহূর্তে ছেলেটির চোখে দেখছে। শুধুমাত্র নিজেকে নিয়েই বাঁচা জীবন হতে পারে না। সে এতটা স্বার্থপর কিভাবে হতে পারে? তার মা,যার সাথে তার নাড়ীর সম্পর্ক,যিনি তাকে দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারন করে জন্ম দিয়েছেন,এত কষ্টের মাঝেও তাকে লালন পালন করেছেন, কিভাবে সে ভুলে গেল মমতাময়ীর এত কষ্টের কথা! তার বাবা,যিনি এত অভাব অনটনের মাঝেও তার ছোট ছোট সব ইচ্ছা পূরণ করেছেন কখনও এতোটুকু কষ্টও বুঝতে দেননি ছেলেকে,কিভাবে সে ভুলে গেল এই মহান মানুষটির ত্যাগের কথা! তার ছোট বোনটি, যে সারাক্ষণ তার সাথে ঝগড়া করার পরেও সে যখন অফিস থেকে বাসায় ফিরে আসে তখন দৌড়ে এসে তাকে প্রচণ্ড খুশির আবেগ নিয়ে জড়িয়ে ধরে, কিভাবে ভুলে গেল সে ছোট্ট বোনটির সেই আবেগের কথা! হটাৎ করেই নিজেকে খুব অপরাধী আর স্বার্থপর মনে হয় শুন্য’র। তার স্বার্থপর বিদায়ের পর এই মানুষগুলোর কি হবে তা একবারও চিন্তা করল না সে! চিন্তাগুলো আলোর গতিবেগে মাথার ভিতর ঘুরপাক খেতে থাকে। কিছুক্ষণ পর নিরবতা ভেঙ্গে ছোট ছেলেটি বলে উঠে,

--ভাইয়া, আপনার কোন বোন নেই?

--হুম আছে,ছোট।

--তাহলে এই নিন, দুইটা কদম ফুল আপনাকে দিলাম। আপনি আপনার বোনকে দিবেন। সে অনেক খুশি হবে।

--ধন্যবাদ, শুকনো মুখে বলল শুন্য।

--বৃষ্টিতে তো অনেকক্ষণ ভেজা হল,আমি এখন যাই। আমার মা আমার জন্য অপেক্ষা করছেন। হয়ত এত বৃষ্টিতে বাইরে আছি বলে অনেক চিন্তাও করছেন। আপনিও বাসায় যান। আপনার মা ও নিশ্চয় আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন,চিন্তা করছেন। ভালো থাকবেন। আবার দেখা হবে।

ছেলেটির হাসিমাখা কথাগুলোর জবাবে শুধু এক চিলতে হাসি দেয় শুন্য আর তারপর নীরব দৃষ্টিতে ছোট্ট ছেলেটির চলে যাওয়া দেখতে থাকে। একসময় বৃষ্টির মাঝে ঝাপসা হয়ে যায় ছেলেটি। শুন্য ভাবতে থাকে জীবনটা কত অদ্ভুত! একটা ১৪-১৫ বছরের নাম না জানা ছেলের সাথে কয়েক মিনিটের কথোপকথন তাকে কত কিছু শিখিয়ে গেল। জীবনের অর্থ, বেঁচে থাকার উদ্দেশ্য, সবকিছু আজ নতুন করে শিখল সে ঐ ছেলেটির কাছ থেকে। হতাশার মেঘ সরে গিয়ে তখন শুন্য’র চোখেও বৃষ্টি। এই বৃষ্টিটারই বোধই দরকার ছিল ওর। উঠে দাঁড়াল শুন্য,পা বাড়াল ঘরের পথে,তার চোখেও এখন ঘরে ফিরে মায়ের ভালবাসা আর বোনের আদরের স্বপ্ন। তখনও বৃষ্টি পরছে। আজকের এই বৃষ্টিটা অন্যরকম শুন্য’র জীবনে। কারণ এই বৃষ্টি শুদ্ধ করে দিয়েছে তার স্বার্থপর মনকে,ধুয়ে দিয়েছে শুধু নিজেকে নিয়ে বেঁচে থাকার ভুল মানসিকতা, শিখিয়েছে কষ্টগুলোকে একপাশে সরিয়ে রেখে বেঁচে থাকার প্রয়োজনীয়তা। সিক্ত রাজপথে একা হেঁটে চলেছে শুন্য আর গুনগুনিয়ে অস্পষ্টভাবে গেয়ে চলেছে,

“সংলাপ সব পড়ে থাক,

বৃষ্টিতে মন ভিজে যাক,

ভালবাসা মেঘ হয়ে যাক।

ঘরে ফেরা পথে, নিরবে নিভৃতে,

মেঘে মেঘে থাক ভালবাসা।”